ঢাকা,রোববার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪

মুসলিম নিধনে শিক্ষার্থীদের অস্ত্র বহনের পরামর্শ

kill-muslim

kill-muslimলিবার্টি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রেসিডেন্ট জেরী ফ্যালওয়েল জুনিয়র মুসলিমদের বিনাশে শিক্ষার্থীদের অস্ত্র বহনের পরামর্শ দিয়েছেন। এ লক্ষ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত একটি সমাবর্তনে ছাত্র-ছাত্রীদের গোপন-অস্ত্র পাওয়ার জন্য আবেদন করার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।

লিবার্টি বিশ্ববিদ্যালয় যুক্ত্ররাষ্ট্রের ভারজিনিয়া রাজ্যের একটি অন্যতম খ্রিষ্টান বিশ্ববিদ্যালয়। গত শুক্রবার লিবার্টি বিশ্ববিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত একটি সমাবর্তনে সাবেক সিনেটর জিম দেমিন্টের বক্তব্যের পর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রেসিডেন্ট বক্তব্য প্রদান করেন।

বক্তব্যকালে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের অস্ত্র আইনের সমালোচনা এবং ক্যালিফোর্নিয়ার সান বারনারদিনোতে হামলার কথা প্রসঙ্গে বলেন, ‘যদি আরো বেশি মানুষ গোপনে অস্ত্র বহন করতে পারে তাহলে খুব দ্রুত মুসলমানদের বিনাশ সক্ষম হবে।’ যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ার সান বারনাদিনোতে গত বুধবার এই হামলায় ১৪ জন মানুষ নিহত হয়। আহত এবং নিহতদের প্রতি সহানুভূতি প্রকাশ করে ফালওয়েল বলেন, যদি আক্রান্তদের কাছে অস্ত্র থাকত তাহলে তারা সন্ত্রাসী হামলার বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে পারতেন এবং নিজেদের রক্ষা করতে পারতেন।

তার বক্তব্য সমাবর্তনে উপস্থিত ছাত্র ছাত্রীদের তুমুল করতালিতে সমর্থিত হয়। উনি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার কঠোর অস্ত্র আইনের যুক্তিকে এরকম ঘনঘন সন্ত্রাসী হামলার প্রেক্ষাপটে হাস্যকর বলে দাবি করেন। বক্তব্যের এক পর্যায়ে উনি বলেন যে, ‘আমি সবসময়ই চিন্তা করতাম যে যদি বেশি সংখ্যক ভালো মানুষ অস্ত্র পরিবহনের অনুমতি পেত তাহলে আমরা মুসলিমদের খুব দ্রুত বিনাশ করতে পারতাম, তারা এসে আমাদের হামলা করার আগেই।’

অনুষ্ঠান শেষে ফালওয়েল আরো বলেন, প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীদের বিনামূল্যে কোর্স করানো উচিত যেখানে অস্ত্র পরিবহনের অনুমতির জন্য কিভাবে আবেদন করতে হয় ছাত্র-ছাত্রীরা শিখতে পারবে। ফালওয়েলের এই বক্তব্য যুক্তরাষ্ট্রের মুসলিম কমিউনিটিতে তুমুল বিতর্কের সূচনা করেছে। এখনকার যুক্তরাষ্ট্রের বর্তমান পরিস্থিতি, বিশেষ করে ক্যালিফোর্নিয়াতে বন্দুক হামলার পর, সেখানে বসবাসরত মুসলমানদের জন্য অনেক বেশি নাজুক হয়ে গিয়েছে।

সেখানে বসবাসরত মুসলিমরা ক্রমাগত হুমকি এবং আক্রমনের শিকার হচ্ছেন। অনেকে এই পরিস্থিতিকে ১১ই সেপ্টেম্বরের হামলার পরের পরিস্থিতির চেয়েও খারাপ বলে দাবি করেছেন। এমতাবস্থায় ফালওয়েলের এ রকম বক্তব্য মুসলিম কমিউনিটিকে একটা হুমকির মধ্যে ফেলে দিচ্ছে বলে মনে করছে সংশ্লিষ্টরা।

আমেরিকান-ইসলামিক রিলেশন পরিষদের মুখপাত্র ইব্রাহীম হুপার ফালওয়েলের বক্তব্যের উত্তরে বলেন, ‘প্যারিসে হামলার পর পুরো বিশ্বে মুসলমানরা একটি বিপজ্জনক পরিস্থিতির মোকাবিলা করছে, এমতাবস্থায় ওনার বক্তব্য অনেকটা আগুনে ঘি ঢালার মতই।’ যদিও একটি সাক্ষাৎকারে ফালওয়েল দাবি করেন, তিনি সমস্ত মুসলিমদের কথা বলেননি। তিনি এটাও স্বীকার করেন, যে কতিপয় মুসলমানের প্রশ্নবিদ্ধ কর্মকান্ডের জন্য অন্যান্য ঈমানদার মুসলিমরা বিপদের সম্মুখীন হচ্ছেন। তারপরও তিনি শুক্রবারে করা নিজের বক্তব্যে অনড় থাকবেন বলে জানিয়েছেন।

সুত্রঃ প্রিয়.কম

পাঠকের মতামত: